অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি সরকার আমলে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, গ্রেনেড হামলা, পাঁচশ জায়গায় একই সঙ্গে বোমা হামলা, ৬৩ জেলায় বোমা হামলা, দুর্নীতিতে পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন। তারা মানুষকে কিছু দেয়নি, মানুষের অর্থ লুট করে বিদেশে নিয়ে গেছে।
তিনি বলেন, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, মাদক, দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে। এই ব্যাপারে সবাই সতর্ক থাকবেন। নিজেদের সন্তান যেন মাদক, জঙ্গিবাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত না হয়।
শনিবার দুপুরে গোপালগঞ্জের কোটালিপাড়ার টিটি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জনসভা মঞ্চে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অনেকেই আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিএনপির তুলনা করেন। কেউ কেউ বলেন বড় দুই দল। কিন্তু আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিএনপির তুলনা হয় কীভাবে?
তিনি বলেছেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি পেয়েছিল ৩০ আসন, তিন‘শ আসনের মধ্যে। আর আওয়ামী লীগ মহাজোট করেছিল। বিএনপির ছিল ২০ দলীয় জোট। বিএনপি পেল ৩০ আসন। বাকি সব আসন পেয়েছে আওয়ামী লীগ। তাহলে দুই দল সমপর্যায়ের হয় কীভাবে?
শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি এমন একটি রাজনৈতিক দল, তারা নিজেরাই দলের গঠনতন্ত্র মানে না। বিএনপির সাজাপ্রাপ্ত কোনো আসামি দলের নেতৃত্বে আসতে পারবে না। খালেদা জিয়া ও তার ছেলে তারেক দুই জনই সাজাপ্রাপ্ত। অথচ তারাই সেই দলের নেতা। সুতরাং সেই দলের সঙ্গে আওয়ামী লীগের তুলনা চলে না। যারা তুলনা করে ভুল করেন। আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে দল গঠন হয়েছে আওয়ামী লীগ। আর জিয়া অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেছে। বিএনপি মানুষকে আগুন দিয়ে পোড়ায়। তারা সন্ত্রাস করে। আওয়ামী লীগের সঙ্গে তাদের তুলনা হয় না।
তিনি বলেন, কথা দিয়েছিলাম ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দেব, সব ঘর আলোকিত করেছি। তবে বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে হবে। বিশ্বব্যাপী সংকট চলছে। আমরা বিদ্যুতে অর্ধেকের বেশি ভর্তুকি দিচ্ছি। আগে ঢাকা থেকে গোপালগঞ্জে আসতে সময় লাগত ২২ ঘণ্টা। আর আজ সকালে তিনি ঢাকা থেকে রওয়ানা দিয়ে মাত্র আড়াই ঘণ্টায় পৌঁছে গেছেন। এটা সম্ভব হয়েছে পদ্মা সেতুর কল্যাণে। বাংলাদেশের মানুষ আত্মমর্যাদা নিয়েই চলে। কেউ অপবাদ দিলে মানবো না।
বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, পদ্মা সেতু নির্মাণ নিয়ে অনেক অপবাদ দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল, সেটি চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছিলাম। কারণ দুর্নীতি করে নিজের ভাগ্য পরিবর্তন করতে আসিনি। জনগণের ভাগ্য গড়তে এসেছি। তাই কেউ যখন মিথ্যা অপবাদ দেয়। সে অপবাদ নিতে আমি রাজি না।
তিনি আরও বলেন, ওয়ার্ল্ড ব্যাংক অপবাদ নিতে চেষ্টা করেছিল। কিন্তু তারা সফল হয়নি। আমরা নিজেদের টাকায় পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছি বলেই আজ এত দ্রুত কোটালিপাড়া, গোপালগঞ্জ ও টুঙ্গিপাড়া এবং দক্ষিণ অঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করতে পেরেছি।
ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের কথা তুলে শেখ হাসিনা বলেন, মহামারির কারণে অনেক সমস্যা দেখা দিয়েছে। ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে সারাবিশ্বে অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিয়েছে। শত সমস্যার মধ্যেও আমরা দেশের উন্নয়ন অব্যাহত রেখে যাচ্ছি।
এর আগে জনসভা মাঠ থেকে গোপালগঞ্জের বিভিন্ন এলাকার ৪৮টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মধ্যে ৪৩টি নবনির্মিত উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন ও পাঁচটি উন্নয়ন প্রকল্পের নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তিনি।
Leave a Reply